top of page

প্রতিশোধ

By Farida Parveen


_____ কতদিন আর কতদিন এভাবে এক শক্ত-সমর্থ লোককে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো যায়? সম্ভব নয়, কিছুতেই সম্ভব নয়_____ কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। রূপু, মিনারও ভবিষ্যৎ আছে। সময় মতো ওদের প্রতি যত্নশীল নাহলে অবশেষে পস্তাতে হবে_____ 

নিজের মনেই গজগজ করছিল চন্দ্রা।

_____ কি গো মা ঠাকুরণ, আমাকে বক্‌ছেন বুঝি! আমি তো_____  

_____ থামো তো। তোমাকে কে বক্‌তে যাচ্ছে! তোমার, কাজ তুমি করো। খাবে-দাবে, পয়সা পাবে। নতুবা বিদায় হবে। 

কাজের মাসি বৃদ্ধা মোক্ষদা আর দাঁড়িয়ে না থেকে কাপ-প্লেট ধুতে মনোযোগ দেয়। সন্ধ্যা হতে না হতেই  পরমেশ চলে আসবে। তারপর চা, জলখাবার তৈরি করবে চন্দ্রা_____ এ তারই আয়োজন। মোক্ষদার কাজ প্রায় শেষ, কাপ-প্লেট ধুয়ে দিয়েই ছুটি। বৃদ্ধা অন্ধকার ঘনিয়ে আসার আগে প্রায় দশ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করে ওর ঘরে ফিরে যায়_____ বয়স হয়েছে, তাই রাতে কম দেখে। তবু দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে এ বাড়িতে তাই  কাজ ছাড়তে চায় না। 

এদিকে পাশের কামরায় পঙ্কজের কানে চন্দ্রার কথা ক’টা গলিত লাভা হয়ে প্রবেশ করে। আজ সে বে-রোজগারে। তাই তো বৌদি এত কথা বলতে পারছে। হাতে যদি কড়কড়ে টাকা থাকত, তাহলে এভাবে অপমানিত হতে হতো না। বৌদির স্নেহের বর্ষণ ওর প্রতি ঝরে ঝরে পড়ত। পঙ্কজ আজই ঘর ছেড়ে চলে যেতে পারত, শুধু দাদার মুখ চেয়ে যেতে পারে না। দাদা আজও মুখ ফটে কিছু বলেনি, হয়তো ছোট ভাইয়ের প্রতি স্নেহের স্পর্শ এখনও পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যায়নি।

পরমেশ যথাসময়ে ঘরে ফিরল। স্ত্রীর ভারাক্রান্ত মুখ দেখে কিছু ঠাহর করতে পারেনা। অনুমানে ঢিল ছোড়ার মতো করে ঠাট্টার সুরে বলে, পূর্ণিমার চাঁদে আজ মেঘের ছায়া কেন! 

চন্দ্রা ফোঁস করে ওঠে, রাখোতো তোমার কাব্যিকতা। খাচ্ছ-দাচ্ছ, অফিস যাচ্ছ। তোমার আবার কীসের চিন্তা? আর আমাকে দেখ সাতকাহন ঘেঁটে মরতে হচ্ছে। আমার কথা কী কখনও ভাব?

সামান্য বিরতি দিয়ে চন্দ্রা ফের বলতে শুরু করে, বলি বাপু! রূপু-মিনার কথা কি কখনও ভেবে দেখেছ? আমার কথা নাহয় ছেড়েই দিলাম।

_____ রূপু-মিনার কথা তো তুমিই ভাববে।

_____ হ্যাঁ। শুধু আমাকেই সবদায় সামলাতে হবে? ওরা বুঝি তোমার কেউ নয়? 

_____ তা নয়। তুমি ওদের মা। তুমিই ওদের ভরসার আশ্রয়স্থল।

_____ ওদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী কিছু ভাববে না? ওদের ভবিষ্যৎ ভেস্তে যাচ্ছে যে!

_____ ভেস্তে যাচ্ছে! পরমেশ বিস্মিত হয়। 

_____ হ্যাঁ। তবে কি! তার একমাত্র কারণ হলো পঙ্কজ। বলি বাপু! শক্ত-সমর্থ ছোকরা। নিজের অন্ন নিজে জুটাতে পারোনা? আর কতকাল দাদার অন্ন ধ্বংসাবে? আমি হলে ততক্ষণে গলায় দড়ি দিতাম। ওর খাওয়া-পরায় যতটা টাকা খরচ হয়, তা দিয়ে রূপু-মিনার প্রতি আরও একটু যত্নশীল হওয়া যেত।

চন্দ্রার এত কথার প্রত্যুত্তরে পরমেশ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলে, তা পঙ্কজকে দোষও দেওয়া যায় না। বেচারা হন্যে হয়ে ঘুরছে, শুধু একটি চাকরির প্রত্যাশায়।

[২]

আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল চন্দ্রা_____ পরমেশের থমথমে চেহারা দেখে থেমে গেল। 

পাশের কামরায় বসে থেকে সবই শুনতে পাচ্ছিল পঙ্কজ। হয়তো, চন্দ্রা ওর উপস্থিতি টের পায়নি, তাই এত কথা বলে যাচ্ছে। সে এত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে না, আজ নির্দ্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে চলে এসেছে। বন্ধুদের সঙ্গে বিশেষ আড্ডা জমেনি_____ আকাশ কালো মেঘে ঢাকা, বৃষ্টি আসবে বলে সবাই আগেভাগে যার যার আস্তানায় চলে গেছে। বৌদির এতসব কথা শোনার জন্য কী ভবিতব্য ওকে সময়ের আগে বাড়ি টেনে এনেছে! হতেও পারে। তবু, প্রতিবাদ করার ভাষা নেই_____ নীরবে বৌদির সব কথা হজম করে গেল।

অতঃপর রাত যখন দশটা, মিনা এসে কামরায় প্রবেশ করে। সুরেলা কণ্ঠে বলে, কাকু খেতে  এসো।

পঙ্কজ মিনার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে, আমি খাব না।  

_____ খাবে না? কেন?

_____ শরীর ভাল নেই। সাত বছরের মিনাকে মন ভাল নেই তো বলা যায় না।

মিনা চলে যায়।

কিন্তু আশ্চর্য! দাদা বা বৌদি কেউ-ই ওর খোঁজ নেয় না। অথচ আগে বৌদি এরকম ছিল না। এখন পঙ্কজকে আপদ-গলগ্রহ ভাবে, কোনক্রমে তাড়িয়ে দিতে পারলে যেন স্বস্থি পায়_____ এরকম মনোভাব। 

পঙ্কজের কানে এখনও বাজছে চন্দ্রার শেষ কথা ক’টা, ‘আমি হলে ততক্ষণে গলায় দড়ি দিতাম। ওর খাওয়া-পরায় যতটা টাকা খরচ হয় তা দিয়ে রূপু-মিনার প্রতি আরও একটু যত্নশীল হওয়া যেত’। কি সাংঘাতিক  কথা! খাওয়া-পরার জন্য যদি গলায় দড়ি দিতে হয়, তাহলে উপোস করে মরাই ভাল। আর পরার কথা_____ ওদের বাবা চলে যাবার পর দাদা ক’টা জামাকাপড় দিয়েছে! পঙ্কজ মনে করতে পারেনা। অথচ এই পরার জন্যও খোঁটা শুনতে হচ্ছে। আর এ বাড়িতে থাকা যায় না। কোথাও চলে যেতে হবে। যাবে কোথায়? দুটি চোখকে অনুসরণ করে_____ বাবা-মা যখন নেই, তখন সংসারে আপন বলে আর কে আছে! বৌদি অন্য ঘরের মেয়ে, কতকাল আর দেবরের বোঝা ঘাড়ে করে বয়ে চলবে!  

পঙ্কজ ওঠে দাঁড়ায়। এবার উবু হয়ে খাটের নীচ থাকে কাপড় রাখার ট্রলি ব্যাগটা বের করে। জামাকাপড় ভাঁজ করতে থাকে_____ 

মনে পড়ে পঙ্কজের দাদা পরমেশের বিয়ের সময় কি কাণ্ড! বৌদিকে নিয়ে গোল বাঁধে। চন্দ্রার মেদবহুল_____ শ্যামলা চেহারা দেখে পরমেশ একেবারে মুষড়ে পড়ে। অথচ মা-কাকি কনে পছন্দ করে এসে বলেন, ডানাকাটা পরী যেন! তবু বিয়েটা সমাধা হয়। নববধু পতিগৃহে প্রবেশ করল বটে, তবে এবার কনে দেখে মা-কাকির মুখ চুপসে গেল ফুটো বেলুনের মতো। কি দেখেছিলেন আর এখন কি দেখছেন! 

এদিকে, পরমেশ ঘরে ঢুকে ওর কামরার দরজা বন্ধ করে দিল। গুরুজনের শত মিনতিতেও দরজা খুলল না। পড়ে রয় অন্ধকার কক্ষে। 

কিন্তু নববধুর ললাটে জুটে শতেক অভিসম্পাত। যদিও পরমেশ শেষ পর্যন্ত দরজা খুলতে বাধ্য হয় এবং বিবাহের আচার-অনুষ্ঠানও কোনোক্রমে সমাধা হয়। তবে, শ্বশুর-শ্বাশুড়ি দুজনেই নববধুকে এড়িয়ে চলতে থাকেন। আর পতি পরমেশ্বর তো অফিস থেকে দীর্ঘদিনের ছুটি নিয়ে ভ্রমনে বেরিয়ে যান। এরকম একটা পরিস্থিতিতে চন্দ্রার জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠল। সেই দুর্দিনে হিতার্থী হিসেবে পঙ্কজই বৌদির পরম বন্ধু হয়ে এগিয়ে যায়। 


[৩] 

একদিন চন্দ্রা বালিশে মাথা গুঁজে অঝোরে কাঁদছিল। এ রকম সময় পঙ্কজ এসে কামরায় প্রবেশ করে। সে তখন সবে মাত্র বাণিজ্যে স্নাতক হয়েছে। বৌদির কান্না দেখে ওর ভীষণ কষ্ট হয়। কাছে গিয়ে ডাকল, বৌদি, বৌদি_____ 

চন্দ্রা কোনো প্রত্যুত্তর দিল না। তবে, কান্না বন্ধ করে নিল।

পঙ্কজ আবারও বলল, বৌদি? উঠে বস_____ কথা আছে_____

একথায় কাজ দিল। চন্দ্রা উঠে বসল।

_____ আমার দিকে তাকাও। চোখ মোছ_____ 

_____ কী কথা বলো?

তুমি এভাবে ভেঙে পড়োনা তো_____ বাইরের খোলসটাই কি মানুষের সব! কিন্তু মা-কাকি যে তোমাকে দেখে এসে অন্য কথা বললেন। 

এ কথায় চন্দ্রা পঙ্কজের নিকট রহস্য উদ্ঘাটন করতে বাধ্য হয়। চোখের জল মুছে নিয়ে বলে, ওর পরিবর্তে ওরই মাসতুতো বোনকে পাত্রী রূপে দেখানো হয়েছিল_____ কেন এই চাতুরিতার আশ্রয় নিতে হয়েছিল ওদের পরিবারকে? কেননা, বারবার পাত্র বা পাত্রপক্ষ চন্দ্রাকে দেখা মাত্র সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দিত। এতে শুধু চন্দ্রা নয়, ওর পরিবারকেও অপদস্থ হতে হয়েছে এবং এতে সম্মান হানিও ঘটেছে। এত সব অপমান সহ্য করে চন্দ্রা প্রতীজ্ঞা করেছিল যে জীবনে কোনোদিন বিয়ের পীড়িতে বসবেনা বা পাত্রপক্ষের সন্মুখস্থ হবেনা। শেষমেষ বড় বৌদির চল-চাতুরিতায় কোনোমতে পার পায়। এক ঘাট ডিঙায় তো ওপর ঘাটে আটকে গেল। 

পঙ্কজ সব শুনে বলে, এ ঘাটও তোমাকে ডিঙাতে হবে এবার_____

_____ কীভাবে? চন্দ্রা উৎসুকতা দেখায়।

_____ তোমার যা যা গুণাবলি আছে সেগুলো প্রকট করতে হবে। 

_____ আমার কোনো গুণ-ই নেই ভাই।

_____ তা হতে পারেনা। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কোনও না কোনও গুণ রয়েছে_____ সেটা মানুষ নিজে বুঝতে পারেনা বলে নিজেকে খাটো ভাবে। বৌদি তোমার রান্নার হাত  কিন্তু চমৎকার_____ রসনা তৃপ্ত হলে অনেক লোককেই দেখা গেছে বেশ সন্তুষ্ট হয়ে যেতে_____ 

পঙ্কজের কথায় চন্দ্রা এই প্রথম নিজেকে আবিষ্কার করল। তাই তো! রান্নাটাও একটা কলা। দেখা যাক, শ্বশুর-শ্বাশুড়ি আর পতিদেবকে চর্ব-চূষ্য-লেহ্য-পেয়ও তৃপ্ত করা যায় কিনা! ছুটি ফুরালে পরমেশ বাড়ি ফিরে আসে।

ধীরে ধীরে সংসারে চন্দ্রার গুণের সমাদর হতে লাগল। রন্ধন কলাটাই এক্ষেত্রে সহায়ক হল। শ্বশুর- শ্বাশুড়িও চন্দ্রার প্রতি সহজ হয়ে উঠলেন। পরমেশ একটা-দুটা করে কথা বলতে বলতে শেষমেষ কথাবার্তায় বৌয়ের সঙ্গে বেশ সড়গড়, তারপর নিভৃতে আলাপন_____চন্দ্রা যখনই ওর বাবার বাড়িতে গেছে, পরমেশ যেচে আনতে গেছে ওকে। অতঃপর দুজনে মিলে মাঝে মাঝে বাজার-হাট। একে ওপরের সঙ্গে খুনসুটি। ক্রমে রূপু-মিনার জন্ম। সবই যখন ভালয় ভালয় চলছিল হঠাৎ একদিন দেখা দিল পরিষ্কার মধ্যাকাশে শোকের ছায়া_____ মা গত হলেন। বাবাও অল্প রোগভোগে ধরাধাম থেকে বিদায় নিলেন। সেই সঙ্গে বৌদিরও লক্ষ্যনীয় পরিবর্তন এসে  যায়। ঝড়ের গতিতে নিজেকে পাল্টে ফেলে। পঙ্কজ কিছুতেই ভেবে পায় না, বৌদি কেন এভাবে নিজেকে পরিবর্তন করে নিল? সে কি ভুলে গেছে বিগত অতীতকে! আশ্চর্য! মানুষ এত সহজে-অনায়াসে পাল্টে যায়! 

  (২)

বাইরে অঝোরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কালো আকাশ, তারমানে মেঘভারাক্রান্ত। চারদিকের পরিবেশটাও তাই অন্ধকারাচ্ছন্ন। রাতও অনেক হয়েছে। দেওয়াল ঘড়িটায় বারোটা কুড়ি মিনিট। অভাগা পঙ্কজের চোখে ঘুম নেই। অথচ ওর মনে হচ্ছে সমস্ত পৃথিবীর লোক যেন সুখনিদ্রায় আচ্ছন্ন। পাশের কামরার দেওয়ালের দিকে তাকায়।  সেখানে দেওয়ালটি প্রাচীরের মতো পঙ্কজের সন্মুখে যেন বিভাজিত হয়ে রয়েছে। চারটি প্রাণী মনের আনন্দে গভীর নিদ্রায় ডুবে আছে। সে আর বিলম্ব করেনা। দরজার সিঁটকিনি খুলে বৃষ্টির প্রাবল্য উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে পা রাখে। নিষ্ঠর সংসার পড়ে রয় যেন পায়ের তলায়। এই বিশাল বিশ্বদ্যানে কোথাও কি খুঁজে পাবে না একখণ্ড মাটি!

*

চন্দ্রা এবার সুখী। স্বামী-পুত্র-কন্যা নিয়ে সে যেন চিরসুখী। নেই কোনো পঞ্চম ব্যাক্তির উপদ্রব। এ সুখে কেউ আর বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না_____ ছিনিয়ে নিতেও পারবে না। পঙ্কজ চলে যাওয়ায় যেন স্বস্থির নিঃশ্বাস নিতে পারছে! 

সেদিন দুপুরবেলা, রোদের তাপে রাস্তা-ঘাট তেজোদীপ্ত। ঘরের ভিতর বৈদ্যুতিক পাখা ভন্‌ভন্‌ করে ঘুরলেও গরমের প্রকোপটা আর কমছেনা। বাইরে গাছপালা সব নিঝুম_____ হাওয়া নেই। এসময় পরমেশ অফিসে, রূপু-মিনা স্কুলে_____ 

ডোরবেল বেজে ওঠে, একবার-দু’বার-তিনবার_____ 

অসময়ে কে এল ভেবে চন্দ্রা মোক্ষদাকে হাঁক পাড়ল_____ না, ওরও সাড়াশব্দ নেই। অগত্যা সে শোওয়া থেকে ওঠে বসল। তারপর দাঁড়িয়ে উঠে অবিন্যস্ত বেশভূষা ঠিকঠাক করতে করতেই দেখতে পায় রান্নাঘরের পাশের খোলা বারান্দায় মোক্ষদা বসে বসে ঝিমোচ্ছে। এবার এগিয়ে গিয়ে চন্দ্রা দরজা খুলে ধরতেই দু’পা পিছিয়ে যায়। নিজেকে ধাতস্থ করে নিতে সামান্য সময় ব্যয়িত হয়। মুখে কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে বলে, আরে পঙ্কজ! বাইরে কেন? ভিতরে এসো।

পঙ্কজ ভিতরে এল বটে! ওর আচরণে অসহিষ্ণু ভাব। যত তাড়াতাড়ি যেতে পারে এখান থেকে সেরকম ভাবে বলল, এই নাও বৌদি_____ তোমার দেবরের রোজগারের সামান্য টাকা, এতে রূপু-মিনার কিছুটা হলেও সুরাহা হবে_____ 

বিষ্ময়ে চন্দ্রার মুখ দিয়ে কথা সরেনা। মিনিট খানেক বিরতি দিয়ে বলে, এ তুমি কি বলছ! এতদিন পর  এসেছ। বসো। দাঁড়িয়ে রইলে কেন? 

_____ অফিসে অনেক কাজ পড়ে আছে। এবার চলি_____  বলে পঙ্কজ টাকার গোছা টেবিলের ওপর রেখে দিল। 

_____ বসো তো বাপু! এত তাড়া কীসের? এক গেলাস সরবত করে নিয়ে আসি_____ 

অগত্যা পঙ্কজ বসল।

চন্দ্রা রান্নাঘরের উদ্দেশে পা বাড়ায়।

দু’মিনিটের মধ্যে সরবত করে নিয়ে এসে অবাক হয় চন্দ্রা। পঙ্কজ নেই, চলে গেছে। অথচ কড়কড়ে নোটগুলো টেবিলের ওপর এমনভাবে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে যেন এই টাকাগুলো পর্যন্ত চন্দ্রাকে উপহাস  করছে!



পঙ্কজের শেষের কথা ক’টা চন্দ্রার কানে বেসুরো বাজতে থাকে, ‘এতে রূপু–মিনার কিছুটা হলেও সুরাহা হবে’।

চন্দ্রা আবারও তাকায় নোটগুলোর দিকে, মনেহয়, টাকাগুলো কেমন ব্যাঙ্গ করছে!

পঙ্কজ এভাবে প্রতিশোধ নিল! সোনাকে পেতল ভেবেছিল চন্দ্রা। অথচ এই পঙ্কজই ছিল ওর দুর্দিনের একমাত্র হিতার্থী। চন্দ্রার স্বার্থান্বেষী মনটা দুমড়ে-মুচড়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে_____  

কতক্ষণ চন্দ্রা স্থাণুর মতো সরবত হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল, খেয়াল নেই। ঘোর কেঁটে যেতে_____ জানালার সন্মুখে এসে দাঁড়ায়। অনেক দূর পর্যন্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করেও চন্দ্রা পঙ্কজের দেখা পায় না। দু’চোখ বেয়ে নেমে আসে জলের ধারা। সে জলধারা আর বাঁধ মানতে চায়না। দূরের বৃক্ষরাজি পর্যন্ত ঝাপসা হয়ে আসে।  


By Farida Parveen


Recent Posts

See All
Tides Of Tomorrow

By Nishka Chaube With a gasp of air, I break free from the pearly white egg I’ve called home for the last fifty-nine days. Tears spring to my eyes, threatening to fall on the fuzzy crimson sand and in

 
 
 
An Allusion For Anderson

By Aeriel Holman Once upon a time, in the damp cream colored sand, sat two ingénues silhouetted against a hazy sun. The night has not yet risen behind them, and the scene is awash in a pearly gray and

 
 
 
The Castle of Colors

By Aeriel Holman Everyday I wonder, as I glance out the window, Who truly loves me? Who truly cares? There is no pretending for me here. I must be alone. No Knights dressed to shame the moon call to m

 
 
 

146 Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating
Eshma Bego.
Eshma Bego.
a day ago
Rated 5 out of 5 stars.

Beautiful Story

Like

Eshma Bego.
Eshma Bego.
a day ago
Rated 5 out of 5 stars.

Beautiful Story

Like

Abdul Hamid
Abdul Hamid
a day ago
Rated 5 out of 5 stars.

Very very nice story

Like

Rated 5 out of 5 stars.

Very nice Story

Like

Abdul Hamid
Abdul Hamid
a day ago
Rated 5 out of 5 stars.

Nice Story

Like
bottom of page