দিনলিপি
- Hashtag Kalakar
- Jan 23
- 1 min read
Updated: Jul 27
By Tanushree Ghosh Adhikary
'দিব্যি আছি', সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার মতো। তুমিও তোমার মতো দিব্যি আছো। মনে পড়ার গল্পে আজ আর যাব না। ভুলতে আমরা কেউই কাউকে পারব না, এটাই চরম বাস্তব। এরচেয়েও বড় বাস্তব, তোমার সাথে পরিচয়ের অর্থ বা সত্যতা হল একে অপরকে দূর থেকে দেখে যাব, একে অপরকে অপ্রয়োজনে মনের মধ্যে পুষে রাখব, অকারণে অনুভব করে যাব।
কৌতূহল বড্ড পছন্দের! তাই বোধহয়, কৌতূহলের সম্পর্কে জড়িয়ে ফেলি নিজেকে বারবার। সারা রাত্রি জেগে কতসব হিজিবিজি লিখি তোমায় নিয়ে। গোপন নোটবুক হল জীবনের কঠিনতম সত্যের ভান্ডার। কি করব বলো? কাউকে তো নিজের কথাগুলো বলতে হবে। কাকে বলব? কে বুঝবে আমার কথা? তোমায় জ্বালাতন করতে মন চায় না। বিরক্ত করবই বা কি অধিকারে? তুমি হয়ত তোমার তরফে আমাকে অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছ। কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি তো আমাকে সেই অধিকার দেয়নি, যখন যা ইচ্ছা, যেমন ইচ্ছা সেভাবে তোমার কাছে যাব, তোমার সাথে কথা বলব।
তবে আর কি? নিয়ন্ত্রণই একমাত্র ভরসা। চোখে চোখে রেখেছি প্রতিনিয়ত। পালাবে কোথায়? তারথেকেও বড় প্রশ্ন, পালাতে চাও কি? এই যে এতো মন জানাজানি, এটা কি নিছকই অকারণ? জানিনা, কিচ্ছু জানিনা। খুব বেশি প্রশ্নও করিনা নিজেকে। আমার সব গোপন প্রশ্নের উত্তর, হয়ত সময়ই দেবে...
আসলে কেউ কাউকে খুব বেশি বুঝে ফেললে, চিনে ফেললে বড্ড মুশকিল। সব বোঝাপড়া তো আর নিয়ম অনুযায়ী হয় না। সব সমীকরণ তো শৃঙ্খলা মানে না। আমরা বাধ্য করি, জোর করি, সতর্ক থাকি নিজেকে বিশৃঙ্খলা বিমুখ রাখতে।
' এটা করতে নেই, ওটা বুঝতে নেই, অতটা জানতে নেই' ওই মানুষটার সম্পর্কে, এইসব শিকল দিয়ে আমরা নিজেকে বাঁধি। এতে হয়ত বাস্তবিক দূরত্ব বাড়ে। কিন্তু মনের দূরত্ব?
মন যদি কাউকে একবার বুঝে ফেলে, তবে বারবার বুঝতে আগ্রহী হয়।ভীষণ অদ্ভুদ এই অযাচিত আগ্রহ। এটা ভাবতে ভীষণ ভালো লাগে, অন্যরকম সন্তুষ্টি 'ওই মানুষটা কে আমার থেকে ভালো আর কেউ চেনে না।'
পাঁচ ঘন্টা পরে তোমার সাথে ঠিক কি হতে চলেছে বা কি করতে চলেছ, সেটা পাঁচ ঘন্টা আগে আমি বুঝতে পারি, আমার মন জানতে পারে, এটা সম্পূর্ণ আমার সক্ষমতা। কিন্তু মুশকিল হল, সব তো প্রকাশ করা যায় না, করতে নেই। চারিপাশের ভারসাম্য যে আমাদেরই বজায় রাখতে হবে। নাহলে যে বিশৃঙ্খলতার ঢেউ এমন ভাবে আছড়ে পড়বে, কোন মহাসাগরের অতলান্তে তলিয়ে যাব, তার ঠিকানা আমরা কেউ জানি না...
কিন্তু ওই যে, মন? মনের অস্থিরতা? সেই ঢেউও তো কম অসহনীয় নয়। তাই তো রাতের পর রাত জেগে লিখি। কত কথা, কত কবিতা, কত গল্প। বলা ভালো, তোমায় নিয়ে পি.এইচ.ডি করছি। দুদিন আগেও সারা রাত্রি জেগে কিসব লিখেছি!
বিষয়বস্তু ছিল 'তুমি'। বাক্যের ভান্ডার জুড়ে শুধু তোমার বর্ণনা, তোমার মন ও চিন্তা, তোমার ভাবনা, এবং অবশ্যই তোমার ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র। ভেবেছিলাম কবিতার খন্ড গুলো তোমায় পাঠাব। কিন্তু, না! ওগুলো অপ্রকাশিতই থাক। আর কিছু পাঠাব না। কিচ্ছু বলব না তোমায়। কতদিন চলে অকারণ মন জানাজানি, চলুক...
অনেক অভিযোগ জমেছে। যদি কখনো সেগুলো প্রকাশিত হয়, তবে তুমি আমার 'অন্য আমি' কে দেখবে। অন্যরা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকবে। তাদের চোখেও থাকবে, অজস্র প্রশ্ন। তাতে আমার কিছু যায় না। শেষপর্যন্ত বাকিটা হয়ত তুমিই সামাল দেবে। ওটাই তোমার কাজ। মনের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আশেপাশের বিশৃঙ্খলতা রুখতে অগ্রসর হও। বহুবার করেছ এই কাজ। আমি তো কেবলই মনকেই শৃঙ্খলার বশে রাখতে চাই। এটুকুই পার্থক্য তোমার সাথে আমার...
তাকিয়ে আছি আগামীর দিকে। অপেক্ষা করছি নানান অজানা সত্যর। তুমি হেঁটে চলো তোমার রাস্তায়। আমি খুঁজে চলি আমার পথ। দিনদিন বড্ড শান্ত হয়ে যাচ্ছি। অশান্ত মনের অস্থিরতায় বড্ড বিরক্ত হই আজকাল। হাজার বছর ধরে পথ হাঁটার মতো শান্ত হতে হবে আমাকে। তাই তো জীবনানন্দ!
জীবনানন্দ আওড়েই ঘুমাতে যাই। প্রেমিক তো অনেক দূরে, প্রেম ও প্রকৃতির সাথেই আমার দৈনন্দিন ওঠাবসা। কবিতার খাতা আমার পছন্দের রান্নাঘর। রান্নার যাবতীয় মশলার উপকরণ জোগান দেয় আমার মন। আমি শুধু রসিয়ে বসিয়ে কষিয়ে রান্নাটুকুই করি। ওটাই আমার কাজ। বাস্তব বড্ড অজানা, নির্মম, রহস্যময়। প্রতিচ্ছবিও যে এতো জীবন্ত হতে পারে, তা আমার আগে জানা ছিল না।
বাকিটা, দেখা যাক...
✍️- তনুশ্রী অধিকারী
By Tanushree Ghosh Adhikary

Comments