একটি মৃত্যু (The Death)
- Hashtag Kalakar
- 2 days ago
- 1 min read
By Indrani Bhattacharya
বড়ো ছেলের টিফিন গুছিয়ে খুব তাড়াহুড়োতে ছোটো ছেলেকে সকাল সকাল স্কুলে দিতে বেরোনোর সময় ছেলেদুটো মাকে দেখাল বাইরের দরজার এককোণে যে এক চিলতে মাটিটুকু আছে পাঁচিল ঘেরা, সেখানে নর্দমার জলে ভেজা একটা বিড়ালছানাটা। ছোটোছেলে মাকে বলল, “কাল একটা লোক সাইকেল করে এটার পা দুটো চাপা দিয়ে চলে গেছে।“ কথা শোনার সময় ছিলনা। রাস্তায় নোংরা জল জমেছে; সেখান দিয়ে ইস্কুলের জামা জুতো পরিয়ে ছেলেদের নিয়ে যেতে হবে ভেবেই মায়ের মন একরাশ বিরক্তিতে ভরে গেল। হৈ হৈ করে বেরিয়ে রোদের মধ্যে বাজার সেরে অন্য দরজা দিয়ে ঢোকার মধ্যে বিড়ালের কথা বুঝি আর মায়ের মনে ছিল না।
দুদিন পর মড়া পচার গন্ধের উৎস সন্ধানে নামতে বৃষ্টির জল, কাদামাটির মধ্যে পড়ে থাকা ছোট্টো নরম অবয়বটার দিকে চশমা ছাড়া চোখে দেখেই মা গেট বন্ধ করে দিল। পচা গলা বিড়াল শিশুর শব মোটা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ফেলে দিতে রাজি হল ভোরের বাঁশিওয়ালা ময়লাবাহক।
ছোটো ছেলেটা বলল, “মা, বিড়ালটা মরে গেল…” নিজের প্রতি একরাশ ঘৄণা নিয়ে মা তাকে স্বান্তনা দিয়ে যখন বলল, ‘দেখবি, যে ওকে কষ্ট দিয়েছে, ওকে বাঁচতে দেয়নি, সেও ভালো থাকবে না।“ মনে মনে মা শিউড়ে উঠল। একটানা বৄষ্টির নির্জনতায়, অসহায় চলতশক্তিহীন বিড়ালশিশুর অভুক্ত মৄত্যু মায়ের রাতের ঘুম মাঝে মাঝেই কেড়ে নিত। প্রতিরাতে মায়ের কল্পনায় নরম তোয়ালেমোড়া পা ভাঙা বিড়াল উষ্ণ দুধ খেয়ে বিছানায় দুই ছেলের পাশে শুয়ে আদুরে আওয়াজ করে শান্তিতে ঘুমায়। মা শক্তকরে বিছানার চাদর চেপে ধরে অস্ফূটে বলে, “ঠাকুর, আমি ভুলে যাইনি ও ওখানে পড়েছিল, আমি তবু… আমার পাপ তুমি ক্ষমা কোরো না…।।
By Indrani Bhattacharya

Comments