অনুপ্রেরণা
- Hashtag Kalakar
- Dec 1
- 2 min read
By Tapabrata Das
– “বাহঃ দারুন!”
– “এই নে…”
– “আরও আছে? দাঁড়া দেখতে দে এক এক করে প্রত্যেকটা…”
– “হ্যাঁ হ্যাঁ ধীরেসুস্থে, কোনো তাড়াহুড়ো নেই! এখানে দেখ, যতোবার খুশি দেখ, বাড়ি নিয়ে যা…”
– “মানে?”
– “কিছুনা, তুই দেখ! আমি একটু ওদিক থেকে ঘুরে আসছি।”
বলে তীর্থ পার্কের বেঞ্চটা ছেড়ে উঠে পকেট থেকে মোবাইলটা বার করতে করতে একটু তফাতে বুড়ো আমগাছটার সামনে এসে দাঁড়ালো। মোবাইলটা সামনে মেলে ধরতেই স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটা মিসড কল। রক্তিম! তাড়াতাড়ি কলের বোতামটায় চাপ দিল তীর্থ।
– “হ্যালো, তুই দেখলি ছবিগুলো?”
– “হ্যাঁ, কিন্তু ওই দুজন কে? মানে প্রত্যেকটা আঁকায় দুটো ফিগার, কারা ওরা? এক সেকেন্ড… ওগুলো কি… তোর আর…”
– “হুম!”
– “কিন্তু আঁকাগুলো এরকম কেন? মানে একটু অদ্ভুত ধরনের! মানে তুই বুঝতে পারছিস আমি কি বলতে চাইছি?”
– “বুঝেছি বুঝেছি, আসলে ওগুলো না তুই আমি যেরকমটা ছবি আঁকি সেরকমটা না, ওগুলো কোনো আঁকাই না! ওগুলো একএকটা মেমোরি। ওর সঙ্গে কাটানো আমার সবচেয়ে বেস্ট মেমোরি ওগুলো। এই যে দেখ না প্রথম যে ছবিটা পাঠিয়েছিলাম! আরে ক্যাম্পাসের মাঠে ওর পড়ে যাওয়ার ছবিটা! সেদিনকে প্রথম দেখেছিলাম ওকে। তাও দূর থেকে, মুখটা তখনও দেখতে পারিনি। দৌঁড়াতে গিয়ে বারবার পড়ে যাচ্ছিল! কখনও পাথরে হোঁচট লেগে তো কখনও পতাকায়! মনে আছে কতবার পড়েছিল ও?”
– “দুবার… তিনবার…?”
– “পাঁচবার! মাঠ সুদ্ধু সবাই হেসে উঠেছিল, সাথে আমিও… প্রথমবার! আর পরের ছবিটা…”
– “হ্যাঁ পরের ছবিটায়… ওই চোখগুলো তো?”
– “হুম কৃষ্ণ-কাজল চোখ! আচ্ছা তুই কখনও ওকে চশমা ছাড়া দেখেছিস? ওই মোটা কালচে নীল ফ্রেমের চশমাটা ছাড়া!”
– “হুম একবার… দুবার… খেয়াল নেই!”
– “প্রথমবার ক্লাসে! মধুরিমা ম্যাম পড়াচ্ছিলেন বোধহয় তখন, তাই লেকচারটা এতো একঘেয়ে লাগছিল! কি একটা কারণে পেছনে ঘুরেছিলাম, কারণটা এখন মনে নেই কিন্তু পেছনে ঘুরতেই ওর মুখটা সবার আগে চোখে পড়েছিল। চশমার কাঁচদুটো মুছছিল ও তখন। হঠাৎ সামনের দিকে তাকালো, হ্যাঁ স্পষ্ট মনে আছে আমার! ঝাপসা চোখে কি দেখতে পেয়েছিল জানিনা কিন্তু প্রথমবার নিজের কানে নিজের হৃদস্পদন শুনতে পেয়েছিলাম আমি সেদিন, যেমনটা পেয়েছিলাম একটু আগে!”
– “কেন একটু আগে কী হয়েছিল?”
– “আরে একটু আগে… এই দাঁড়া তোকে একটু পরে কলব্যাক করছি! আরোহীর কল…”
কলটা কেটে তীর্থ পুনরায় ফিরে গেল সেই বেঞ্চটার সামনে।
– “আমাকে এখানে একা ফেলে কার সঙ্গে ব্যস্ত ছিলিস শুনি?”
– “আরেঃ…”
– “ছাড়! আজ উঠলাম টিউশন আছে।”
– “এতো তাড়াতাড়ি! সরি সরি, ভেরি সরি!”
– “আরেঃ সত্যিকারের আছে…”
– “আর ছবিগুলো? ওগুলো সঙ্গে নিবিনা?”
– “ওগুলো তোর কাছে থাক। আমি কি আর তোর মতো আর্টিস্ট!”
বলে আরোহী ওর চামড়ার ব্যাগটা কাধে তুলে বেঞ্চ ছেড়ে উঠে দাঁড়াল।
অনেক্ষন ধরে তীর্থর ফোনটা ম্যাসেজের শব্দে বারবার কেঁপে-কেঁপে উঠছিল।
“কিরে দেখিয়েছিস ছবিগুলো আরোহীকে?"
“কি বলল ও?”
“আছিস কোথায় তুই?”
“কইরে..?”
বিরক্ত হয়ে ফোনটা উল্টে রাখল তীর্থ। মনে মনে আরোহীর বলে যাওয়া শেষ শব্দগুলো আওড়াতে থাকল। মুখ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো।
– “তোর আর্টিস্ট হওয়ার দরকারও নেই। তুই নিজেই একটা আর্ট! একটা অনুপ্ররেণা, যা আর্টিস্টকে আর্টিস্ট হয়ে উঠতে বাধ্য করে।”
পাশে বেঞ্চের ওপরে রাখা ছবিগুলো হাতে নিল সে। সবার ওপরের পাতাতেই আরোহীর দুটো চোখ! ঠোঁটের কোনে হাসির ঝিলিক দেখা গেল ওর। পাতাটা ওলটালো তীর্থ। আর সাথেসাথেই চমকে উঠল। প্রায় একমিনিট ধরে দম আটকে ছবিটা ভালোভাবে দেখার পর মুখ জুড়ে একটা বিজয়ের হাসি ফুটে উঠল ওর। আনন্দে লাফিয়ে উঠতে ইচ্ছে হল।
একটা ঝাপসা আঁকা। ক্লাসরুম! সামনে একটা আবছা কালো মুখ। বেশিরভাগটাই অস্পষ্ট। কেবল ওই মুখটা একটু স্পষ্ট। নীচে ছোটছোট করে লেখা - ‘টু ডিয়ার অনুপ্ররেণা!’
By Tapabrata Das

Vison sundor story ta ❤️ ✨.... Keep it up 🙌🏻
Vison sundor story ta ❤️✨... Keep it up 🙌🏻
Nice story, Keep it up!👍🏻👍🏻
Great 👍
nice👍