top of page

Orchid Villar Rohoshyo

By Sanchita Kar


অর্কিড ভিলার রহস্য


কুশল ফোনটা নামিয়ে থমথমে মুখে রণিতাকে বলল, “ চটপট রেডি হয়ে নে, একবার অর্কিড ভিলা যেতে হবে”।  রণিতা ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল, “এখন? কি ব্যাপার বলতো?” “লিলিদি আর নেই”, বলে ঘরে চলে গেল কুশল। রণিতা হতভম্ব হয়ে রেডি হতে গেল। চাকরির পাশাাশি দুই ভাই বোন শখের গোয়েন্দাগিরি ও করে একটু আধটু। সেইজন্যই পাড়ার স্বনামধন্য গবেষকের মেয়েকে যখন মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল, ওদেরকেই সবার আগে খবরটা দেওয়া সমীচীন মনে করলেন ইনস্পেক্টর ব্যানার্জি।

ভূষণ বাবুদের বাড়িটা রাস্তা থেকে অনেকটা ভেতরে। বহুকাল বাদে ওরা এপাসটাতে আসছে। সেই ছোটবেলায় খেলতে আসত মাঝে মাঝে। বেলা দশটা নাগাদ ওরা অর্কিড ভিলাএ পৌঁছাল। একজন মহিলা দরজা খুলে দিল। খুব জোর চৌত্রিশ বছর হবে। মহিলার পরনে স্কার্ট ব্লৌস, চুল হাল্কা বাদামি, ফর্সা, কতকটা দক্ষিণী আদল রয়েছে চেহারায়। এক বিশালাকার লিভিং রুমে বসতে বলে, উনি পাশের ঘরে গেলেন। একটু পরে হুইলচেয়ারে করে এক বয়স্ক ভদ্রলোককে নিয়ে ফিরে এলেন।

ভদ্রলোক নমস্কার করে বললেন, “আমি যতীন্দ্র ভূষণ। আমিই ফোন করেছিলাম তোমাকে”। ওনার সাথে আলাপ করে জানা গেল ওনার স্ত্রী দু বছর আগে গত হয়েছেন। আর তার কিছু মাস আগেই ওনার একটা বড়ো অ্যাকসিডেন্টে পা দুটো অকেজো হয়ে গেছে। এই নার্স, শিউলিই তার দেখাশোনা করে। বাড়িতে সদস্য বলতে সে, শিউলি, মেয়ে লিলি, লিলির বর রনদেব, ভূষণবাবুর বিধবা দিদি সুলতা ও বাড়ির চাকর রামু। ভূষণবাবুর চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। চোখের কোণ থেকে জল মুছে কুশলদের বললেন, “ মেয়েটাও অকালে চলে গেল। পুলিশ কাছারির বেশি ঝামেলা এড়িয়ে তোমরা যদি এর কোনো কুল কিনারা করতে পারো দেখ। ইন্সপেক্টর ব্যানার্জী অবশ্য সকালে বডি নিয়ে গেছেন। বললেন হার্ট এ্যাটাক হতে পারে”।

“কি নিয়ে গবেষণা করেন?”, জিজ্ঞেস করল রণিতা। “আমি সরোলজিস্ট, নানা রকমের টিকটিকি ও গিরগিটি নিয়েই মূলত কাজ”। সোফার পাশে শ্বেত পাথরের টেবিলের ওপর ধুলোর রেখাতে চোখ বুলিয়ে কুশল জানতে চাইলো বাড়ির সবার সাথে কথা বলা যাবে কিনা। ভূষণবাবু তৎক্ষণাৎ রামুকে ডেকে পাঠালেন ওদেরকে ভেতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

লিলির ঘরটাতে আগে গেল। একটা বিছানা, টেবিল, চেয়ার আর আলমারি ছাড়া তেমন কিছুই নেই। টেবিলের ড্রয়ারটা খুলে একটু অবাক হলো রণিতা। কয়েকটা কাগপত্রর নিচে একজন বিদেশি গায়িকার ফ্রেমে বাঁধানো ছবি। উনি কে জিজ্ঞেস করায় ভূষণ বাবু অল্প হেসে বললেন “ও তেমন কেউ না। লিলি এই গায়িকার অন্ধ ভক্ত ছিল। সারাদিন ইনার গান শুনতো”।

উন্তিরিশ বছরের একজন মহিলা এক গায়িকার নাকি এত ভক্ত যে সেই ছবি বাঁধিয়ে রাখল? ব্যাপারটা একটু অদ্ভুত লাগল দুই ভাই বোনেরই কিন্তু কিছু বললো না। এরপর তারা একে একে সবার সাথে কথা সারলো।

রামু নাকি রোজ ভোর বেলায় দুধ আনতে যায়। আজও সে সেইখানেই ছিল প্রায় আধ ঘন্টা। তারপর ফিরে এসে চা বানায়। লিলির ঘরে চা দিতে যাওয়ার সময় সে রনদেবকে ও ঘর থেকে প্রায় ছুটে বেরিয়ে যেতে দেখে। তারপর চা টেবিলে রেখে সে বেরিয়ে যায়। লিলির ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠার অভ্যেস, তাই সে ৬:৩০ তেও ঘুম থেকে ওঠেনি দেখে তাকে ডাকতে গিয়ে দেখে যে সে কোনো সারা দিচ্ছে না। বাবুকে বলতেই সে তাড়াতাড়ি ইন্সপেক্টর ব্যানার্জীকে খবর দেন। উনি ই নাকি কিছুটা জোর করেই কুশল দের এ বাড়িতে আনা করান। সব শুনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে ঘাড় নাড়ল রণিতারা।

ভূষণ বাবুর কথায় কুশলরা টের পেল যে উনি জামাইকে একেবারেই পছন্দ করেন না। তার ওপর আবার রণ আর লিলির বেশ কয়েকদিন যাবৎ ঝামেলা হচ্ছিল টাকা-পয়সা নিয়ে। রণর সাথে সে বিষয় কথা বলে জানতে পারে যে ওর ব্যাবসায় নাকি লোকসান হয়ে গেছিল তাই লিলির অগাধ সম্পত্তির থেকে সে তিন লাখ টাকা চেয়েছিল। লিলি সে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় এই ঝামেলা। কেন টাকা দিতে চায়নি সে কথা জিজ্ঞেস করাতে রণ বললো লিলি নাকি ওটা দিয়ে বাবার চিকিৎসা করাতে চেয়েছিল। রণ তাই আর কথা না বাড়িয়ে চলে যায়। এক ঘরেও শোয়েনি সে রাতে। 

“আমি ওর সঙ্গে থাকলে এমনটা হতো না জানেন। এখন মনে হচ্ছে ওই কটা টাকা নিয়ে ঝগড়াটা না করলে হয়তো আজ আমায় এদিন দেখতে হত না”। “তাই নাকি? বাবাহ আপনার তো দেখছি বউয়ের প্রতি খুব ভালোবাসা। তো সেই ভালোবাসার টানেই কি ভোর বেলা ওনার ঘরে গেছিলেন? নাকি ঐ সময়েই এই জঘন্য কাজটা করেছেন? পালাতে গিয়েই তো মনে হচ্ছে পা এর নোখটা উল্টেছেন”। রণ অবাক হয়ে কুশলের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ওঠে, “বিশ্বাস করুন আমি এ কাজ করিনি। আমি যখন ওর ঘরে ঢুকি, ওর গা পুরো ঠান্ডা হয়ে গেছিল, শ্বাস পড়ছিল না। আমি… আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম তাই পালিয়ে গেছিলাম”। রনর ঘর টা তল্লাশি করার অনুমতি পেতে খুব একটা বেগ পেতে হলনা। রণদেব বাবুর যে এই কাজের একটা মোটিভ ছিল সেটা তো স্পষ্ট।

ইতিমধ্যে ময়না তদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গেল যে লিলির শরীরে অধিক মাত্রায় এক ধরনের হেমাটক্সিন পাওয়া গেছে যার থেকে মাসল স্পাসম এবং শ্বাসকষ্ট হয়ে শেষে মারা যায় সে। ঘরের জলের গ্লাসটাতে কোনরকম বিষ পাওয়া যায়নি। চা এর পাত্রেও কিছু পাওয়া যায়নি। আর তার মৃত্যু হয় রাত ২ টো থেকে ৪ টের ভেতর। কিন্তু তাহলে বিষটা শরীরে ঢুকলো কেমন করে?

এরপর তারা কথা বললো সুলতা দেবির সাথে। সকাল থেকে পিসিমা কেঁদে কেঁদে শরীর খারাপ করে ফেলেছেন। এখন শুয়ে শুয়ে ওদের কথার জবাব দিলেন। বয়স্ক পিসিমার খুব আদরের ছিল এই লিলি। লিলিও তার খুব যত্ন করত। ওষুধ থেকে শুরু করে সব কিছুর খেয়াল রাখতো সে। এইসব বলতে বলতে সে আবার কেঁদে উঠলো। রামু কোনমতে তাকে একটু ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করল। কুশলরাও অবস্থা বুঝে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। বেরিয়ে আসতেই দেখে শিউলি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে। কুশলদের দেখে জিজ্ঞেস করলেন, “কিছু বুঝলেন? স্যার অসুস্থ বলে আমি জিজ্ঞেস করলাম। আসলে যতই হোক, আমার বোনের মতোই তো ছিল ও। খুব ফাঁকা হয়ে গেল জানেন বাড়িটা। রণ বাবু বরাবরই স্বার্থপর। তবে ও যে এরকম কিছু করতে পারে এটা আমরা কেউ কখনও ভাবিনি”। রণিতা এতক্ষন চুপ করে ওর কথা শুনছিল, হঠাৎ বলে উঠল, “আপনি কি করে সিওর হচ্ছেন যে এটা ওনারই কাজ?”

সে কথার জবাব দেওয়ার আগেই ব্যানার্জীর লোক এসে জানায় যে রনদেবের ঘর থেকে একটা শেষ হওয়া ওষুধের শিশী পাওয়া গেছে, যেটার মধ্যে লিলির শরীরে পাওয়া হেমাটক্সিনটা একটা গুরুত্বূর্ণ উপাদান। স্বভাবতই এই প্রমাণের ভিত্তিতে রণদেবকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

রণিতারাও বাড়ি ফিরে আসে। দুজনের মনেই এক খটকা – এত সহজে ধরা পরে গেল? নাকি কেউ তাকে ধরিয়ে দিল? ফাঁকা হওয়া শিশিটাই যদি বিষক্রিয়ার কারণ হয় তাহলে সেটা খুনি অমন ভাবে ঘরে রেখে দেবে কেন? কেমন যেন মনে হচ্ছে ওদেরকে কেউ একটা তার নিজের সাজানো গল্পটুকুই শুধু বলছে, আসল সত্যিটা এটা নয়। ওরা তাই ঠিক করে, পরদিন অফিস থেকে ফিরে আবার যাবে ও বাড়িতে। রাতে ইনস্পেক্টর ব্যানার্জীর থেকে জানা যায় যে ওটাতে নাকি শুধু পিসিমার আঙ্গুলের ছাপ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। এবার ওদের সন্দেহ টা আরও বেড়ে যায়। 

রণিতা মোবাইলে তোলা ওই বাড়ির ছবিগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ ভাইকে বলে, “শিউলিকে দেখলি কেমন জরিপ করছিল আমাদের সর্বক্ষণ? আমার ওর ভাব গতিক ভালো ঠেকছে না”। 

“তুইও লক্ষ্য করেছিলি তাহলে? তবে আমি অন্য কথা ভাবছি। ওই গায়িকার ছবিটার কথা। এত বড় ফ্যান যে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখল আর শিউলি, যে নাকি এই গায়িকার গান কখনো পছন্দই করতো না, সেও দেখলাম ছবিটাকে সযত্নে বুকের কাছে জড়িয়ে দাড়িয়েছিল। এই শিউলির ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা দরকার। আশা গভর্নে্স এজেন্সি থেকে এসেছে বললো তো। ওদের একটা কল লাগাই দারা”। 

“হ্যাঁ তুই ওটা কর, আমি ততক্ষন একটু এই গায়িকা , কি নাম যেন? ও হ্যাঁ জেসিকা উইলসন এর ব্যাপারে খোঁজ নিই”, এই বলে রণিতা ল্যাপটপটা কোলে টেনে নিয়ে বসে। কুশলও ফোনটা নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।

ওদের মা সেই সময় ঘরে ঢোকে কি একটা কাজে। উনি আবার পাড়ার দুর্গা পূজার ক্লাব এর মাথা,  তাই প্রচুর দাইত্য। রনিতাকে ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকতে দেখে বলে, “শোননা রনি আমাকে একটু পুজোর চাঁদার হিসেবটা করে দিস বাবা। এবারেও তো ভূষণবাবু চাঁদা দেবেন না। সেই বুঝে তো ঠাকুর মশাই কে বলতে হবে”। মুখ তুলে রনি জিজ্ঞেস করে, “এবারও মানে? আগের বার দেননি বুঝি?” “না। আসলে উনিই প্রায় অর্ধেক খরচা দেন কিন্তু এই অসুস্থ হওয়ার পর থেকে গত দু বছর দেননি কিছুই। এবার আবার লিলি চলে গেল। তার কাছে কি ওভাবে চাওয়া যায়?”

“হ্যাঁ, লিলি ভূষণ, বেশ সুন্দরী মহিলা ছিল।“ “লিলি দাস, ভূষণ নয়। ওকে জেসিকা দত্তক নিয়েছিল যখন ওর দশ বছর বয়স, তাই পদবি টা আর পাল্টায়নি। তোরা তো খুব ছোট ছিলি তাই মনে নেই”।

রণিতা এতক্ষন হা করে মা-এর কথা শুনে উল্লাসে মাকে বলল, “মা তুমি বেস্ট”। কুশলও ঘরে ফিরে ততক্ষনে সবটা শুনে অবাক। আরও কয়েকটা ফোন সেরে ব্যাপারটা পুরো জেনে পরদিন বিকেলে ওরা আবার গেল অর্কিড ভিলাতে। ইনস্পেক্টর ব্যানার্জীও রনদেবকে নিয়ে হাজির। ভূষন বাবু তো ওদেরকে দেখে অবাক। “কি ব্যাপার ইনস্পেক্টর? আবার কিসের জন্য? রণকে কেন এনেছেন এখানে? ওরতো লকআপে থাকার কথা।” “আরে ধৈর্য ধরুন, ঠিক জানতে পারবেন”। এক রাশ বিরক্তি নিয়ে সবাই জমায়েত হয় বসার ঘরে।

কুশল বলতে শুরু করে, “লিলিদি বিষক্রিয়ার ফলে মারা যায় রবিবার ভোর রাতে। ৫:৪৫ নাগাদ ঘরে ঢোকেন রণ বাবু। সেটা হতে পারে যে উনি সত্যিই শুধু কথা বলতে গেছিলেন বা এও হতে পারে যে মারার পর দেখতে গেছিলেন যে সত্যিই মরল কিনা। কিন্তু সেখানে একটা সমস্যা, রণ বাবুর পক্ষে তো এ কাজ করা সম্ভবই না কারণ ওই ওষুধের প্রধান উপাদান ওই হেমাটক্সিন হলেও, তা এতই পাতলা করে দেওয়া হয় যে, ওটার বিষের প্রভাব কেটে গিয়ে ইমিউন সিস্টেম কে সতেজ বানায়”। 

সেই শুনে ভূষনবাবু বললেন, “রণ করেনি? তাহলে কে করল?”

কুশল তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “সেটা কি আপনি সত্যিই জানেন না? এক প্রকার গিরগিটির থেকেও যে একই বিষ উৎপাদন হয় এবং সেটা এতটাই গাঢ় যে জলে মাত্র চার ফোটা মেশালেই মানুষের প্রাণ যেতে পারে, সেটা তো আপনার থেকে ভালো কেউ জানবে না। অবশ্য আপনার আর এক মেয়ে মানে শিউলি সারাহ্ ভূষন জানতেও পারে। সে-ই তো মনে হয় জলের গ্লাসটা ধুয়ে অন্য গ্লাস রেখে এসেছিল। গায়িকার চেহারার সাথে এত মিল দেখেই সন্দেহ হয় আমাদের। নিজের বউএর কথাটা বেমালুম চেপে গেলেন? নিজের মেয়ে নয় বলে লিলিকে মারলেন তার ভাগের সম্পত্তি হাতাবেন বলে অথচ সে কিন্তু আপনার জন্যই রনকেও টাকা দেয়নি আর জামাইকেও মিথ্যে প্রমাণে জেলে পাঠালেন। ঘরের জিনিস গুলো নিশ্চই বেচার পর আইডিয়াটা মাথায় আসল নাহলে হয়ত দামি ফুলদানিগুলো বেঁচে যেত”।

ইনস্পেক্টর ব্যানার্জি উঠে দাড়িয়ে বললেন, “চলুন হাজতে। এই এদের দুজনকে গ্রেপ্তার করো”। পুলিশ চলে গেলে রণ বাবু কুশলের হাত ধরে ধন্যবাদ জানালেন ওনাকে জেল হওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য।

কাজ শেষ করে দুই ভাই বোন হাসি মুখে রাস্তায় বেরিয়ে এলো। গন্তব্য – বিরিয়ানির দোকান।


By Sanchita Kar

Recent Posts

See All
Thinly Veiled Creases

By Paula Llorens Ortega Her veil was a shroud of mourning: a callous sobriety that bore too much weight but which the wisps of wind could carry. It hung loosely, swaying like a tendril of hazy mist. 

 
 
 
Where My Shadow Runs

By Roshan Tara Every morning, I sweep dust outside the tea stall. The school gate is right across. Kids laugh and run in, holding their mums’ and dads’ hands. They wear shiny shoes and smell like soap

 
 
 
The Light That Waited

By Roshan Tara I sat in my car, wanting to run. Or die. Work, family, my own skin crushed me. Then I looked up. An old man stood by the vegetable stall with a child. The vendor dumped scraps—spoiled,

 
 
 

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating
bottom of page