top of page

চোরাবালি

By Farida Parveen


অর্ন্তনিহিত ব্যাপারটা রেখা কিছুতেই বুঝতে পারেনি। তনুময় যে ভিতরে ভিতরে এরকম একটা মতলব আঁটতে পারে, আদৌ একথা সে ভাবেনি! ওঘরে যে সব কথাবার্তা হয়, তা ভাল করে ওর জানা। রেখা আড়ালে দাঁড়িয়ে থেকে কথাগুলো শুনে যায়। পরিস্থিতি-পরিবেশের কোনো হেরফের হয় না। তনুময় হাসপাতাল থেকে ফিরেই প্রথমে ওর মা’র ঘরে যায়। প্রতি সন্ধ্যাবেলা হোক বা রাত করেই সে বাসায় ফিরে আসুক না কেন, রেখার শ্বাশুড়ি ভারতি দেবী একই সুরে একই রকম ভাবে গজগজ করতে থাকেন, আমাদের ওরা ঠকিয়েছে। তনু, তুই একটা বিচ্ছেদের মকদ্দমা কর। আমি ভাল মেয়ে দেখে আবার তোর বিয়ে দেবো। এবার আর ঠকঠকামি নয়। একটা গাড়ি আর নগদ দশলক্ষ  টাকা চেয়ে নেবো।       

শ্বাশুড়ির এসব কথা আড়াল থেকে শুনে ভয়ে রেখার বুক ধড়ফড় করে। ওর বাবা তনুময়ের মতো ডাক্তার পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেবার সময় গাড়ি দেবার অঙ্গীকার করেছিলেন বটে, তবে দশলক্ষ টাকা দেবেন, এরকম কোনো কথা হয়নি। কিন্তু রেখার বাবা এখনও গাড়ি দিতে পারেননি বলে তনুময়ের মা ভারতী দেবী তাতেই ক্ষুদ্ধ-ক্রূদ্ধ। এই যে দেওয়া-থোওয়ার ব্যাপারটা নিষ্পত্তিতে না এলেও, রেখা শ্বাশুড়ির কূটপনাকে কষ্ট বলে মনে করেনা। বরং সে তনুময়ের প্রতি আরও যত্নশীল হয়েছে। রেখার মনেহয় সে সব কলুশ-কুটিলতা থেকে নিজের মনকে মুক্ত রেখেছে শুধু ওরই জন্য, ওকে ভালবাসে বলেই। 

গতরাতে তনুময় হাসপাতাল থেকে ফেরা মাত্র ভারতদেবী ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই আক্ষেপ করতে থাকেন, আর সে অন্যদিনের মতোই নিশ্চূপ। ছেলের মৌনতাকে গ্রাহ্য না করেই বলে চলেন, কত ঝড়-ঝাপটা দূরে ঠেলে ছেলেকে একহাতে মানুষ করেছি, তোর বাবা জীবিত থাকলে সে অন্য কথা ছিল। এখন এসবের কী যোগ্য মূল্য পাবনা?

ভারতী দেবী এক তরফা বকে বকেও ক্ষান্ত হলেন না। এবার কণ্ঠে ক্ষোভ মেশান, আজকাল হেঁজিপেঁজি   পাত্রকেও বিয়েতে গাড়ি দেয়। ছেলে আমার ডাক্তার, তা ভুললে চলবেনা। আমরা তো সত্তর-আশি লক্ষ টাকা   দামের গাড়ি চেয়ে নিচ্ছিনা, শুধুমাত্র একটি সাধারণ বিলাসী গাড়ি চেয়েছি____     

নীরবতা ভঙ্গ করে তনুময় এবার ফিসফিসিয়ে বলে, মা চুপ কর। রেখা শুনতে পাবে।

_____ শুনুক না। ভারতী দেবী ক্ষুদ্ধ গলায় বলেন, ওদের যদি কথার মূল্য থাকেনা তো আমাদের কীসের এত গরজ? মেয়ে শুনে বাপকে বলুক। তাতে যদি কাজ হয় তো ভাল। নাহলে আমি আবার ছেলেকে বিয়ে দেব।   

বিয়ের পর থেকে বছর খানেক ধরে দুই পরিবারের মধ্যে টালবাহনা চলছিল। বাপের বাড়ির গাড়ি আদৌ এসে পৌঁছবে কিনা, রেখা জানেনা। কিন্তু এটুকু সে বুঝেছে তনুময় ওকে ত্যাগ করবে না। শ্বাশুড়ি যতই কুমন্ত্রনা দেন না কেন সে ওকে ভালবাসে। ওকে ত্যাগ করার কোনো কারণই নেই। সে তো স্ত্রী হিসেবে তনুময়ের নিকট কোনো অপরাধ করেনি!

কিন্তু গতরাতে তনুময়ের কথাগুলো রেখাকে ভাবিয়ে তুলেছে। মা-ছেলেতে যখন শলা-পরামর্শ চলছিল, রেখা নিঃসাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে বুঝতে চেষ্টা করে, এটাই কি ওদের শেষ সিদ্ধান্ত! 

ভারতী দেবী প্রথম থেকেই রেখার প্রতি অসন্তুষ্ট। কারণ, উপযুক্ত যৌতুক মিলেনি। অর্থাৎ, রেখার বাবা বিয়ের সময় গাড়ি দিতে পারেননি বা এখনও গাড়িটি এসে পৌঁছায়নি। মাঝে মাঝে পাড়া-প্রতিবেশীরা এসে গাড়ির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে যান। সেদিন পাশের বাড়ির এক মহিলা এসে উপযাচক হয়ে বলেন, দিদি তোমার ছেলের ভাগ্য বটে। গতকাল দুপুরবেলা নূতন চকেচকে একটা গাড়ি এসে বাসায় ঢুকলো দেখলাম_____ তনুর শ্বশুর পাঠিয়েছেন বুঝি! অবশেষে বেয়াই মহাশয়ের টনক নড়েছে তাহলে! এরকম একজন সুপাত্রের সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দেওয়া কি চাট্টিখানি কথা! কিন্তু এখন বাসায় ঢোকার সময় গাড়িখানা দেখতে পেলামনা_____ তনুময় কি হাসপাতালে যেতে চালিয়ে নিয়ে গেছে! 

[২]

থুক করে পানের পিক ফেলে ভারতী দেবী মুখখানা বাংলায় পাঁচের মতো বানিয়ে বলেন, তনুর শ্বশুরের কথার কি মূল্য আছে! তারপর কথার পিঠে কথা যোগ করেন, তনুর এক বন্ধু ওর বিয়েতে পেয়েছে গাড়িখানা_____ আমাকে প্রণাম করতে এসেছিল, দুপুরবেলা তো, তখন ওকে খাইয়ে তবে ছাড়লাম। খেতে খেতে গল্প করছিল ওর শ্বশুরের উদারতার কথা। শুনে প্রাণ জুড়িয়ে গেল। তনুর শ্বশুরের মতো কিপ্‌টে লোক আমি কোথাও দেখিনি। অতঃপর একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে ভারতী দেবী পুণরায় যোগ করেন, মা হয়ে আমি আমার ছেলের কপাল পুড়লাম_____ 

প্রায় নিত্য দিনের এসব কূটকাচালি বার্তালাপ। রেখা অসহায় ভাবে তনুময়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে শান্তনা খুঁজে। না, ওকে সে কোনোদিন এসব কথা বলেনি। অথচ গতরাতের কিছু কিছু কথা একেবারেই অন্য ধরণের ছিল। রেখা স্থির দাঁড়িয়ে আড়াল থেকে মা-ছেলের প্রতিটি কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যায়।

_____ তনু, বল তোর কী হয়েছে? তোর মুখখানা কেমন যেন বিষন্ন হয়ে আছে। মনে হচ্ছে ভিতরে ভিতরে তুই পুড়ে খাঁক হয়ে যাচ্ছিস! 

_____ এ আমার দুর্ভাগ্য মা। তুমি এতদিন ঠিক কথাই বলেছ। এখন আমি বুঝতে পারছি ফাঁকিটা_____ 

_____ ফাঁকি! কীসের ফাঁকি?

_____ ওই যে গাড়ির ব্যাপারটা। লোকে বলে যৌতুক নেওয়া উচিত নয়। কথাটা ঠিক নয়। আমি ভেবে দেখলাম সমাজে বসবাস করতে হলে নিজের মান-সন্মানেরও তো কথা আছে। তুমি যৌতুক হিসেবে গাড়ি চেয়ে কিছু ভুল করোনি মা। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিচ্ছেদের মকদ্দমা করব। আর তাই আমি একবার উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে চাই।  

_____ হ্যাঁ বাবা, তাই করিস।

রেখা আর দাঁড়ায়না। দ্রুত পায়ে নিজের ঘরে ফিরে আসে। ওর ভিতরটা অপমান-বেদনায় ছিঁড়ে যেতে লাগল। রাগ হলো ওর বাবার ওপর। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোওয়া কেন! রাগ হয় তনুময়ের ওপর। লোকটা এতটা নিষ্ঠূর। নাকি লোভী! কী প্রয়োজন ছিল এমন অভিনয়ের? মনোভাবটা যদি এই-ই  তবে কেন মিথ্যে ভালবাসার অভিনয়। অথচ এই মানুষটাই তো কতদিন ওকে শান্তনা দিয়ে বলেছে, রেখা, তোমাকে মায়ের ওই অপমানজনক কটু কথা থেকে বাঁচাতে পারছিনা_____ এ আমার অপমান। আমি একটা কিছু করতে চাই, একটা কিছু_____   

তনুময়ের আবেগ বড় স্পর্শনীয় ছিল। রেখা তাই আকূল হয়ে বলেছে, তুমি ভেবনা_____ সময়ের সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে। তাছাড়া তুমি তো কিছু বলোনি! কিন্তু এখন বুঝতে পারছে, সে ওর মাকেই মনেমনে সমর্থন করেছিল। না, রেখা হার মানবেনা। সে বিচ্ছেদ মানবেনা। বিচ্ছেদের কাগজে সই দেবেনা। তনুময়ের সাধ্য কি বিচ্ছেদ পেতে পারে! নাহয় রেখা খোরপোষ দাবী করবে। আদালত তো একা তনুময়ের পক্ষে রায় দান করবেনা। রেখা যেন চোরাবালিতে পা ডুবিয়ে একটুকু জল খুঁজে পায়।

একটা দুর্ভাবনার মধ্য দিয়ে আরও কয়েকদিন কেঁটে যায়। তনুময় এই ক’দিন রেখার দিকে ফিরেও তাকায়নি। সবসময় কেমন যেন চুপচাপ থাকত।

রেখা-ই উৎসুক হয়। তনুময়ের থমথমে মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে মাঝে মাঝে বোঝার চেষ্টা করতো, ওদের কাঙ্কিত পদক্ষেপটি কতদূর পর্যন্ত এগিয়েছে। না, রেখা মুখ খুলতো না, তনুময়ও না। রেখা শুধু অনুমানে বোঝার চেষ্টা করতো_____ তনুময় সেদিন হাসপাতাল থেকে ফিরতেই ভারতী দেবী এগিয়ে গেলেন। সরাসরি জিজ্ঞেস করে বসেন, হ্যারে, উকিলের সঙ্গে পরামর্শ কিছু হল? 

রেখা শুধু চুপ করে শুনে যায়।

[৩]

আগামী কালকের মধ্যে তুমি খবর পাবে।

রেখার শ্বাসরুদ্ধ অবস্থা। কি হয়, কি হয়, মনের ভাব!

রাত্রির অবসানে সূর্যদোয় হয়, কে জানে ওর জীবনে কি আছে! সূর্যদোয় না হয়ে যদি তমসা ঘনিয়ে আসে ওর জীবনে চিরকালের জন্য। বিনিদ্র রাত কাটায় রেখা। পরদিন সূর্যদোয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত একটা অধ্যায়ের  অবসানের ধ্বনি ওর অন্তরে প্রতিধ্বনিত হয়। রেখার দেহমন যখন হতোদ্যমে প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়, তখন-ই এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল!

সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে তনুময় সঙ্গে তনুজাকে নিয়ে। দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা রেখার দিকে ফিরেও তাকায় না। চাপা গলায় ডেকে ওঠে, মা-মা-দেখো, কে এসেছে! ভারতী দেবী তরতরিয়ে এগিয়ে এলেন। উৎফুল্লিত কণ্ঠে বলে ওঠেন, তনুজা! আয় মা, আয়। কতদিন পরে এলি? জামাই কোথায়? 

_____ ও আসেনি_____ বলেই মায়ের বুকে কান্নায় ভেঙে  পড়ল তনুজা।

রেখা অনতি দূরে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। 

ভারতি দেবী ব্যস্ত হয়ে পড়েন, আরে হলো কি! কাঁদ্‌ছিস কেন?

মেয়ের মুখে-মাথায় ভারতিদেবী হাত বুলিয়ে দিতে দিতে জিজ্ঞেস করেন, খুলে বল দেখি, কি হয়েছে_____ 

তনুজা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। একটু স্থির হয়ে বলে, শ্বাশুড়ি আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন_____ 

ভারতী দেবী দপ্‌ করে জ্বলে ওঠেন, এত সাহস! আমার মেয়েকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেবার সাহস ওপায় কোথা থেকে!

রেগে গেলে ভারতী দেবী কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ‘তুই’ সম্বোধন করেন যাকেতাকে। 

_____ আসল কথা বলতো দেখি, কেন তোকে তাড়িয়ে দিল?

_____ তোমার জামাইর কলেজ বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে, তাই যাতায়াতের কষ্ট হয়। শ্বাশুড়ির নির্দেশ, বাপের বাড়ি থেকে একটা গাড়ি নিয়ে না গেলে ঘরে ঢুকতে দেবেন না!

_____ তুই কী বললি?

_____ বললাম, আমি তা বলতে পারবনা। মেয়েকে লেখপড়া শিখিয়ে অনেক টাকা খরচ করে বিয়ে দিয়েছেন_____ আবার গাড়িও দেবেন, তা হয় না।

_____ ঠিক বলেছিস। শুনে কী বলল?

যা নয় তা বললেন। অকথ্য ভাষা সব। মা-বাপ তুলে বকাঝকা_____ এসব শোনা আমার পক্ষে অসহ্য মা! যেমন করে হোক একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে দাও_____ 

_____ জামাই কী বলল?

_____ সে আর কি বলবে? সে তো ওর মায়ের কথায় পুরোপুরি সমর্থন জোগাচ্ছে।

_____ ওদের এত সাহস! মেয়েকে আমি বুকে করে মানুষ করেছি। কত যত্নের সঙ্গে প্রতিপালন করেছি আর ওরা গঞ্জনা দেবে! ভারতী দেবী-র কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে।


[৪]

তনুময় এসে মায়ের পাশে বসল। স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল, উকিলের সঙ্গে আজ পরামর্শ করতে পারিনি। হাসপাতালে পৌঁছেই তনুজার ফোন পেলাম_____ 

কান্না ভুলে তনুজা জিজ্ঞেস করে, উকিলের সঙ্গে পরামর্শ কেন? 

রেখা স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। বিশ্বাসঘাতক এই মানুষটা ওর সঙ্গে ছলনা করেও ক্ষান্ত হলোনা! ওর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটাবে তারপর হয়তো স্বস্থি পাবে।

ভারতী দেবী এবার খাটো গলায় বলেন, তনুর শ্বশুর যৌতুক হিসেবে গাড়ি দেবেন বলে প্রতীজ্ঞাবদ্ধ হয়েও এখনও দেননি। আমি ভেবে নিয়েছি, এবার মেয়েকে দিয়ে ওর বাবার কাছে চাপ সৃষ্টি করব। ওই গাড়িটা পেয়ে গেলে তোকেই দিয়ে দেব_____ 

_____ মা, এ কী বলছো তুমি? না, তা হয় না। 

_____ কেন হয় না শুনি?

_____ আমার মতো সমস্যায় দেখি, তনুর বৌও খুবই বিপদে পড়েছে! আমার ব্যথায় তুমি ব্যথিত। তনুর বৌও তো অন্য কারোর মেয়ে!

তনুজার কথা শেষ হতে না হতেই ভারতী দেবী দু’হাত দিয়ে মুখ ঢেকে নিয়ে সটান বিছানায় ধপাস্‌ করে  শুয়ে পড়েন। ভারী শরীরটা এমন ভাবে এলিয়ে দেন যেন জ্যান্ত লাশ! 

রেখা বিগত দিনের সব কথা ভুলে গিয়ে এগিয়ে যায়। ব্যাকূলকণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, কী হলো, কী হলো মা?

_____ কিছু না। আমার কিছু হয়নি। তোরা আজ আমায় চোখে আঙুল ধরিয়ে দিলি_____ বড্ড লজ্জা করছে! 

ভারতি দেবী ভারী বপু নিয়ে ওঠে বসেন এবার। রেখার হাত ধরে বলেন, বলতে মুখে আটকাচ্ছে, তবু আমি নিরূপায়। তনুজার লাজ রাখতে তোমাকে এগিয়ে আসতে হবে। আশীর্বাদের সময়ে এ পক্ষ থেকে তোমাকে যে সীতাহার দেওয়া হয়েছিল, ওটা এখন বন্ধক রাখতে হবে। তনুও সাহায্য করবে। কোনোরকম যদি সাত-আট লক্ষ টাকার মধ্যে একটা গাড়ি দিয়ে মেয়েটাকে সংসার করাতে পারি! 

তনুজা হঠাৎ খিলখিলিয়ে হেসে ফেলে, গাড়ির প্রয়োজন হবে না। এটা একটা আগাগোড়া নাটক ছিল_____ তনুর পরামর্শ মতো।

তনুময় একেবারে মা’র কাছ ঘেঁষে বসল এবার। বলে, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। মায়ের সঙ্গে নাটক করতে হলো বলে! তোমাকে বোঝাতে অক্ষম ছিলাম, তাই এসবের অবতারণা।

ভারতী দেবী বলেন, এতদিন বুঝতে পারিনি আমি কি অন্যায় করে চলেছি! তোরা আজ আমায় শিখিয়ে দিলি যে, সংসারে ভাঙ্গনের খেলায় মেতে উঠতে নেই। সত্যিই তনুজার যদি এমন দশা হতো। 

তনুময় এবার মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, যা হবার হয়ে গেছে। ভেবে আর এখন কাজ নেই। প্রত্যেক শ্বাশুড়ি যদি পুত্রবধুকে নিজের মেয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতেন তাহলে সংসারে কোনো সমস্যা-ই থাকতনা।

রেখা কিছুই বুঝতে পারছেনা আগাগোড়া ব্যাপারটা ভোজবাজির মতো হয়ে গেল কিনা!

এক গভীর প্রত্যয় নিয়ে ভারতী দেবী উঠে দাঁড়ান। বলেন, আগামীকাল থেকে এ বিষয় নিয়ে ঘরে ঘরে, পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে প্রচার চালাবো; যৌতুকের লোভ-লালসা থেকে প্রত্যেক শ্বাশুড়ি বা পরিবারের সকলকে দূরে থাকতে। এ এমন এক খেলা_____ এর পরিণতি মারণব্যাধি কর্কট রোগের মতো ভয়াবহ।  

[৫]

আয় মা’রা, আজ থেকে আমার এক মেয়ে নয়, তোরা দু’জনেই আমার অতি আদরের মেয়ে।


By Farida Parveen



 


Recent Posts

See All
If We Could Stop Time

By Jacob James Grigware We would meet every night after a bullshit day's work. We would laugh at the fact that we don’t have to sleep. Don’t have to eat. Don’t have to get ready for tomorrow's bullshi

 
 
 
Chat GPT

By Ella Kang Dear Diary, June 11th, 2025 The indigenous moments of my life, the cold winds callously swaying around my waist, and the infuriating clatters of the disgracefully rusted horseshoe of that

 
 
 
Death Is Not My Enemy — The Blessed

By Matthew Schmidt They say that in their final moments, people relive their lives, revisiting the highs and lows as the  brain searches for forgotten knowledge to help it process the unknown feeling

 
 
 

Comments

Rated 0 out of 5 stars.
No ratings yet

Add a rating
bottom of page